সুস্থ থাকার ৫০ টিপস

জীবনকে উপভোগ করতে প্রত্যেকেরই স্বাস্থ্য সচেতন হওয়া জরুরি। কিন্তু কীভাবে সুস্থ্য থাকা যায়? সহজ করে বললে, পুষ্টিকর খাদ্যগ্রহণ, পর্যাপ্ত ঘুমানো, নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম ও কর্মময় থাকাটাই মূল বিষয়। এ ছাড়া রোগ ব্যাধি সম্পর্কে জানা ও স্বাস্থ্য সচেতন থাকাই আসল। গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি অভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে সুস্থ থাকা যায়। তেমনই ৫০টি স্বাস্থ্য টিপস নিচে দেয়া হল।



১. প্রতিদিন খুব সকালে ঘুম থেকে ওঠে দুই অথবা তিন কি.মি. হাঁটুন। এতে মন এবং প্রাণ সতেজ থাকবে।
২. খাবার গ্রহণ করার আগে ও টয়লেট ব্যবহারের পর অবশ্যই হাত ধুয়ে নিন।
৩. যখনই খাবার খাবেন তখন ভালো করে চিবিয়ে খাবার গ্রহণ করুন। এতে পাচন ক্রিয়া ঠিক থাকবে।
৪. মোটা হওয়ার প্রধান কারণ হলো তৈলাক্ত এবং মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়া। তাই এ ধরনের খাবার কম খান।
৫. বেশি পরিমাণে সবুজ শাক-সবজি আর ফলমূল খান।
৬. বেশিরভাগ সময় হেঁটেই কাজ সারুন। এতে পায়ের মাংসপেশির ব্যায়াম হবে। খুব প্রয়োজন না পড়লে লিফট ব্যবহার না করে সিঁড়ি বেয়ে নামুন।
৭. সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে পানি পান করা শরীরের জন্য খুব উপকারী।
৮. মাথাব্যথা হলে প্রচুর মাছ খান। মাছের তেল মাথাব্যথা প্রতিরোধে দারুণ কার্যকর। খেতে পারেন আদা। প্রদাহ এবং ব্যথা নিরাময়ে তা বিশেষভাবে কার্যকর।
৯. ঘরে তৈরি খাবার খান। শরীর ভালো রাখতে ঘরে তৈরি বিভিন্ন সালাদ বা স্বাস্থ্যকর খাবারের কোনো বিকল্প নেই। ঘরে খেতে পারলে তো ভালোই। তবে কাজের ব্যস্ততার কারণে অনেকের ক্ষেত্রেই তা সম্ভব হয় না।
১০. হাঁপানিতে পিয়াজ খান। শ্বাসনালির সংকোচন রোধে তা ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। পেটের পীড়ায় খেতে পারেন কলা, আদা। আদা মর্নিং সিকনেস এবং বমি বমিভাব দূর করে।
 ১১. নানাগুণের অধিকারী মধু। অসাড়তা, গলাব্যথা, মানসিক চাপ, রক্তস্বল্পতা, অস্টিও পোরেসিস, মাইগ্রেনসহ নানা শারীরিক সমস্যায় মধু বিশেষভাবে কার্যকর।
 ১২. ঘি, বাটারওয়েল, মার্জারিন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। এর পরিবর্তে ভেজিটেবল ওয়েল, ওলিভ ওয়েল ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
১৩. ব্রোকলি, স্পিনাক, গাজর, টমেটোতে প্রচুর ক্যান্সার প্রতিরোধী উপাদান আছে। কিন্তু তাপ দিলে এই ক্যান্সার প্রতিরোধ উপাদান বিনষ্ট হয়। তাই কাঁচা খেলেই ভালো।
 ১৪. গরমের দিন রাতে শোয়ার আগে গোসল করুন, এতে ঘুম ভালো হবে। রাতে ঢিলেঢালা পোশাক পরুন। শরীরের প্রত্যেকটা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ রোম ছিদ্রের মধ্য দিয়ে শ্বসন প্রক্রিয়া চালায়। সে কারণে শোয়ার আগে ঢিলেঢালা পোশাক পরে ঘুমানো উচিত।
১৫.যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সকালের নাস্তা সেরে ফেলুন। গবেষণায় দেখা গেছে যে সকালের নাস্তাটি শরীরের বিপাকীয় কার্যে সহায়তা করে থাকে। তাই আপনি যদি ঘুম থেকে ওঠার ১ ঘণ্টার মধ্যে আপনার সকালের নাস্তাটি সেরে নিন।
১৬. কম সুগার এবং বেশি প্রোটিনজাতীয় খাবার খান। অতিরিক্ত সুগার সকালের খাবারের কার্যক্ষমতাকে নষ্ট করে দিতে সহায়ক। তাই নিশ্চিত করুন যে আপনার সকালের নাস্তাটি যেন কম সুগারসম্পন্ন হয়ে থাকে। এ ছাড়া সকালে ক্যালরিসম্পন্ন খাবারের পরিবর্তে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন ডিম, রুটি খান যা আপনার দেহের স্বাস্থ্য রক্ষার্থে সহায়তা করে থাকবে।
১৭. ক্যালরিযুক্ত খাবার অল্প খেলেই আপনার ওজন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে শরীরের প্রয়োজনে কমপক্ষে ৩৫০ ক্যালরি গ্রহণ করা উচিত।
১৮. সকালবেলা কখনই এমন ধরনের খাবার খাবেন না যেগুলো পেটে গ্যাস তৈরি করে। বরং পুষ্টিকর কিছু খাবার খান যা আস্তে আস্তে হজম হয় এবং সারাদিন আপনাকে কর্মক্ষম রাখে।
 ১৯. বিকাল ৫টার পর ভারী খাবার খাবেন না (বিশেষ করে দুপরের খাবার)।
 ২০. পানি সকালে বেশি পান করুন, রাতে তুলনামূলক কম।
২১. ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ওষুধ খাবেন না।
২২. ওষুধ খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শুয়ে পড়বেন না।
২৩. সর্বদা বাম কানে ফোন রিসিভ করুন। ফোনের ব্যাটারি যখন এক দাগ তখন ফোন রিসিভ না করাই ভালো, কারণ তখন ফোনের রেডিয়শন বেশি থাকে।
২৪. কাঠবাদাম খান। চকলেটের মতো কাঠবাদামেও আছে প্রচুর কপার যা মেলানিনের পরিমাণ ঠিক রাখে। এ ছাড়া আছে প্রচুর ভিটামিন ই যা সুন্দর ত্বক ও চুলের জন্য খুবই জরুরি।
২৫. বিরতি নিয়ে কাজ করুন। তাড়া যতই থাকুক প্রতি এক ঘণ্টা কাজ করার পর এক-দু্ই মিনিট চোখ বন্ধ করে বিশ্রাম নেওয়া উচিত। এতে মস্তিষ্ক পরিষ্কার হয় এবং সচল থাকে।
২৬. সারা দিন শুয়ে-বসে অযথা থাকবেন না, আবার দিনভর পরিশ্রমও নয়। কাজের ফাঁকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে।
২৭. ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড যুক্ত মাছে উচ্চ মাত্রার প্রোটিন আছে যা আপনার হাড়, চুল, ত্বক সবকিছুর জন্যই জরুরি। এ ছাড়াও সামুদ্রিক মাছ শরীরে পর্যাপ্ত ও প্রয়োজনীয় হরমোন তৈরিতে ভূমিকা রাখে।
২৮. এসিডিটি বা বুকজ্বলা হলেও অল্প অল্প করে ঘন ঘন খাবার খেতে হবে। তৈলাক্ত খাবার, ভাজাপোড়া ও বেশি মসলাযুক্ত খাবার কম খান। একসঙ্গে বেশি খাবার না খেলেও উপকার পাওয়া যায়। খাওয়ার সময় পানি কম খান। দুই খাবারের মধ্যবর্তী সময়ে বেশি বেশি পানি পান করতে হবে।
 ২৯. শারীরিক ব্যায়ামের দিকে বিশেষ নজর দিন। বিশেষ করে স্ট্রেচিং এবং যোগব্যায়ামের দিকে। কারণ এতে করে দেহে অঙ্েিজন প্রবাহের মাত্রা বেড়ে যায়।
৩০. খাদ্য তালিকায় ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার রাখুন। পরিমিত পরিমাণে ভিটামিন এ এবং ই সমৃদ্ধ ফল এবং শাক সবজি নিয়মিত গ্রহণ করুন। চর্বি ও তৈলযুক্ত খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন, এটা আপনার ত্বকে ব্রণ সৃষ্টি করতে পারে।
৩১. খাওয়ায় অরুচি ও ক্ষুধা মন্দা হলে ১-৩ গ্রাম আদা খোসা ছাড়িয়ে মিহি করে কুচিয়ে নিন। এবং তার সঙ্গে লবণ এবং কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে প্রতিদিন একবার করে ৭-৮ দিন খান।
 ৩২. টিনজাত সব খাবার খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিন। টিনজাত নানা খাবার ও ফ্রোজেন ফুড আমাদের জীবনকে সহজ করে তুলেছে ঠিকই কিন্তু এটি আমাদের দেহকে ধীরে ধীরে ঠেলে দিচ্ছে মৃত্যুর মুখে।
 ৩৩. ফল জাতীয় খাবার না ধুয়ে খাবেন না। রাস্তায় খোলা জায়গায় বিক্রি হওয়া আখের রস, লেবুর রস খাবেন না।
৩৪. শ্বাসকষ্টের জন্য ঘুমের ব্যাঘাত ঘটলে কখনোই ঘুমের ওষুধ খাবেন না।
৩৫. স্টিম বাথের মাধ্যমে খুব সহজে দেহকে ক্ষতিকর টঙ্নি মুক্ত করা যায়। তবে স্টিম বাথের পর দেহকে রিহাইড্রেট করতে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। ৩৬. চা বা কফি পানের পরিবর্তে গ্রিন টি পান করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। গ্রিন টিয়ের অ্যান্টিঅঙ্েিডন্ট আমাদের দেহের সুরক্ষায় কাজ করে।
 ৩৭. ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হলে কোনো খাবার বন্ধ করবেন না। খাবার স্যালাইন খান। এর সঙ্গে তরল খাবার বেশি করে খান।
৩৮. গাজর ক্যারোটিনসমৃদ্ধ সবজি। শিশুর ছয় মাস বয়স থেকে গাজরের রস দিতে পারলে ভালো হয়। এতে ত্বক, চুল ও চোখ ভালো থাকে। শ্বাস-প্রশ্বাসের সংক্রমণ, চোখ ও ত্বকের সংক্রমণে গাজর খুবই উপকারী।
৩৯. যারা হাঁপানি বা ডায়াবেটিসে ভুগছেন তারা স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ এড়িয়ে চলুন এতে আপনার বিশেষ ক্ষতি হতে পারে।
৪০.আপনি কম্পিউটার বা কোন এক জিনিসের ওপর মনোযোগ নিবদ্ধ করে অনেক সময় ব্যয় করে থাকেন। আপনি মাঝে মাঝে চোখের পলক ফেলবেন এতে করে আপনার চোখ ক্লান্তি পেতে পারে।
 ৪১. সারা দিনে যখনই সময় পাবেন তখনই বড় বড় নিঃশ্বাস নিন এবং ছাড়ুন। এতে করে আপনার দেহে দ্রুত বেশি পরিমাণে অঙ্েিজন প্রবেশ করবে এবং নিঃশ্বাস ছাড়ার মাধ্যমে দেহকে টঙ্নি মুক্ত করতে সহায়তা করবে।
 ৪২. দিনের বেলা ঘুম এড়িয়ে চলুন। রাতে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন।
৪৩. বিভিন্ন লবণ জাতীয় খাবার ও টিনজাত বা প্রসেসড খাবার, লবণাক্ত বাদাম, আচার, অতিরিক্ত ঝাল খাবার ইত্যাদি না খাওয়াই ভালো। কারণ এই গুলো খেলে সারাদিন তৃষ্ণা অনুভব করবেন।
৪৪. ধূমপান ও মদপান থেকে দূরে থাকুন। যতটা সম্ভব ধূমপান ও মদপান থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন। দেহে নানা ধরনের ক্ষতিকর টঙ্নি প্রবেশের মূল কারণ হচ্ছে এই ধূমপান ও মদপান।
৪৫. শরীরের তাপমাত্রা যখন নিচে নেমে যায় তখন ভাইরাস আক্রমণ করে তাই আপনার শরীর উষ্ণ রাখুন।
৪৬. আপনার পা ভেজা রাখবেন না। পা ভিজলে তা শুকনো নরম কাপড় দিয়ে মুছে ফেলুন। ডেটল পানিতে মিশিয়ে হাত পা পরিষ্কার করুন যাতে আপনার হাতে পায়ে চুলকানি লাল লাল ফুসকুড়ি বা ত্বকের নানা সংক্রমণ জাতীয় রোগ এড়ানো যায়।
৪৭. সাধারণ সর্দি-কাশি বা জ্বর হলে নিজে নিজে অ্যান্টিবায়োটিক খাবেন না।
৪৮. দেশি হোক বা বিদেশি, খাদ্য তালিকায় রাখুন প্রতিদিন বেরি জাতীয় ফল। এই দুটি উপাদানই স্বাস্থ্যকর ত্বক ও চুলের জন্য অত্যন্ত জরুরি। এরা কোলাজেনের উৎপাদন বাড়ায় এতে বয়স বৃদ্ধির প্রক্রিয়া ধীর করে তথা আপনার যৌবন ধরে রাখতে সহায়তা করে।
 ৪৯. জন্মের পরপরই আপনার শিশুকে মধু, চিনির পানি, মিসরির পানি বা পানি খেতে দেবেন না। জন্মের প্রথম তিন দিন শিশুকে গোসল করাবেন না।
 ৫০. সব সময় সোজা হয়ে বসুন। দীর্ঘসময় এক জায়গায় বসে থাকবেন না। চেয়ার ছেড়ে ১০ মিনিট হেঁটে আসুন।

----------------------------------------------------------------------------
পরামর্শ দিয়েছেন-ডা. আ প ম সোহরাবুজ্জামান এমডি, এফসিপিএস, সিনিয়র কন্সালটেন্ট কার্ডিওলজিস্ট, পরিচালক, কার্ডিয়াক ক্যাথ ল্যাব ও হার্ট রিদম সার্ভিসেস, ল্যাবএইড কার্ডিয়াক হাসপাতাল সূত্র- বাংলাদেশ প্রতিদিন
Next Post Previous Post
8 Comments
  • Best For You
    Best For You July 28, 2018 at 1:04 PM

    This comment has been removed by the author.

    • Unknown
      Unknown September 12, 2018 at 2:16 AM

      visit here



      http://health-tips-online-human.blogspot.com/

  • Unknown
    Unknown September 12, 2018 at 2:15 AM

    আপনার পোস্ট টি আমার কাছে খুব ভাল লাগলো। আমার একটা health tips website আছে। চাইলে ঘুরে আসতে পারেন।

    নিচে লিংক আছে

    http://health-tips-online-human.blogspot.com/

  • Unknown
    Unknown February 12, 2019 at 2:51 AM

    thank you for sharing this information in bangoli language.

    submit guest post health

  • Anonymous
    Anonymous March 8, 2019 at 1:50 AM

    রাতে ঘুমানোর সময় সূচি কেমন হবে.কয়টা থেকে কয়টা

  • Helth Guru 360
    Helth Guru 360 June 28, 2019 at 7:35 PM

    খুব সুন্দর একটি পোষ্ট করেছেন। এই পোষ্টটি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমার ছোট একটা ওয়েব সাইট আছে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন▶▶▶https://newsbangla20.com

  • Helth Guru 360
    Helth Guru 360 June 28, 2019 at 7:39 PM

    This comment has been removed by the author.

  • Unknown
    Unknown September 22, 2020 at 10:30 AM

    Tnx খুব ভালো ।

Add Comment
comment url