ছাত্র ছাত্রীরা ইংরেজি ভাষা কেন শিখবে
ইংরেজি ভাষার প্রভাব নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। বর্তমানে ইংরেজি ভাষা শেখা ঠিক বাড়তি যোগ্যতা নয়, অপরিহার্য বলা যায়। আর বিদেশে পড়তে যাওয়ার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে হলে প্রথমে ভাষার প্রস্তুতিটার প্রয়োজন হয়। একটি দেশ থেকে আরেকটি দেশে গিয়ে পড়াশোনা করতে হলে আপনাকে ওই দেশের ভাষায় পড়তে হবে, নয় তো পড়তে হবে আন্তর্জাতিক ভাষা ইংরেজিতে।
ইংরেজি ভাষার দক্ষতা প্রমাণের জন্য বাংলাদেশে দুইটি পরীক্ষা আইইএলটিএস ও টোফেল চালু আছে, যা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। তবে বিভিন্ন দেশের চাহিদা আলাদা হতে পারে। যেমন ধরুন, যে দেশে যেতে আইইএলটিএস লাগে, সে দেশে টোফেল লাগে না এই রকম আর কি।
IELTS: আইইএলটিএস পরীক্ষা দেয়ার জন্য আপনার কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রয়োজন নেই। আইইএলটিএস হলো পরীক্ষার্থীর ইংরেজি ভাষা জ্ঞান যাচাইয়ের পরীক্ষা। এ পরীক্ষায় চারটি অংশ থাকে রিডিং, লিসেনিং, রাইটিং ও স্পিকিং। আইইএলটিএসে লিসেনিংয়ে কথোপকথন শুনে বোঝার ক্ষমতা যাচাই করা হয়। ৪০টি প্রশ্ন থাকবে সাধারণত। কোনো বিষয়ে বক্তৃতা, কথোপকথন ইত্যাদি বাজিয়ে শোনানো হয় পরীক্ষার্থীদের। শোনা অংশ থেকেই প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়।
একটি বিষয় শুধু একবারই বাজিয়ে শোনানো হয়। রাইটিংয়ে পরীক্ষার্থীর ইংরেজি লেখার দক্ষতা যাচাই করা হয়। প্রথম প্রশ্নটিতে সাধারণত কোনো চার্ট, ডায়াগ্রাম থাকে। এ থেকে নিজের কথায় বিশ্লেষণধর্মী উত্তর লিখতে হয়। দ্বিতীয় প্রশ্নটিতে সাধারণত কোনো বিষয়ের পক্ষে-বিপক্ষে মত বা যুক্তি উপস্থাপন করতে হয়। ১ ঘণ্টা থাকে সময়। রিডিং বিভাগেও ৪০টি প্রশ্ন থাকবে। সময় ১ ঘণ্টা। নানা জার্নাল, বই, সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন থেকে কিছু অংশ তুলে দেয়া হবে। সেখান থেকেই বাক্য পূরণ, সংক্ষিপ্ত উত্তর, সঠিক উত্তর খুঁজে বের করা ইত্যাদি থাকবে।
দেশের বাইরে পড়তে যাওয়ার আগে যা জানা দরকার
স্পিকিংয়ে ৩টি অংশে ১১ থেকে ১৫ মিনিটের পরীক্ষা হয়। প্রথম অংশে পরীক্ষার্থীকে কিছু সাধারণ প্রশ্ন করা হয়, যেমন: পরিবার, পড়াশোনা, কাজ, বন্ধু ইত্যাদি। দ্বিতীয় অংশে একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে ২ মিনিট কথা বলতে হয়। তৃতীয় অংশে ৪ থেকে ৫ মিনিটের কথোপকথন হয় পরীক্ষকের সঙ্গে।
আইইএলটিএসের ক্ষেত্রে একাডেমিক ও জেনারেল ট্রেনিং দুইভাবে অনুষ্ঠিত হয়। স্নাতক, স্নাতকোত্তর অথবা পিএইচডি পর্যায়ে পড়াশোনার জন্য একাডেমিক মডিউলে পরীক্ষা দিতে হয়। ইমিগ্রেশনের জন্য সাধারণত জেনারেল ট্রেনিং মডিউলে পরীক্ষা দিতে হয়। প্রস্তুতির শুরুতেই আপনার লক্ষ্য ঠিক করে নিন। এজন্য প্রথমেই মক টেস্ট দিয়ে নিলে ভালো হয়। এতে বুঝতে পারবেন, আপনি লক্ষ্য থেকে কত দূরে আছেন। তারপর সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নিন। প্রতিদিন নিয়ম করে পড়াশোনা করুন। কত দিন ধরে প্রস্তুতি নেবেন, এটা আপনার দক্ষতার ওপর নির্ভর করে। এছাড়া স্পিকিংয়ের জন্য বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে ইংরেজিতে কথা বলার অভ্যাস করুন। এটাও বেশকিছু দিন ধরে চর্চা করা উচিত। ক্যামব্রিজ থেকে প্রকাশিত আইইএলটিএস পরীক্ষার পুরনো প্রশ্নপত্রের বই কিনতে পাওয়া যায়। এগুলো সমাধান করুন।
আইইএলটিএস সম্পর্কে যে কোনো তথ্য পেতে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হলো ব্রিটিশ কাউন্সিল এবং আইডিপি বাংলাদেশ। ব্রিটিশ কাউন্সিলের লাইব্রেরিতে প্রস্তুতির জন্য প্রচুর ভালো বই পাবেন। তবে এগুলো ব্যবহারের জন্য লাইব্রেরির সদস্য হতে হবে। বাংলাদেশে ব্রিটিশ কাউন্সিল ও আইডিপির আয়োজনে আইইএলটিএস পরীক্ষা দেয়া যায়। প্রতি মাসেই নির্দিষ্ট তারিখে দুই বা তিনবার পরীক্ষা দেয়া যায়। ওয়েবসাইটে অথবা ফোন করে পরীক্ষার তারিখ জেনে নিতে পারেন।
ব্রিটিশ কাউন্সিলের আয়োজনে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটে পরীক্ষা দেয়া যায়।
যোগাযোগ :
ব্রিটিশ কাউন্সিল ঢাকা-০২৮৬১৮৯০৫,
চট্টগ্রাম-০৩১৬৫৭৮৮৪-৬,
সিলেট-৮২১৮১৪৯২৫।
ওয়েবসাইট :www.britishcouncil.org/bangladesh
আইডিপি বাংলাদেশ www.bangladesh.idp.com
TOEFL: প্রাতিষ্ঠানিক ইংরেজি বোঝার ক্ষমতা এ পরীক্ষার মাধ্যমে নেয়া হয়। টোফেল পরীক্ষায় ফল ২ বছরের জন্য কার্যকর থাকে। ২০০৫ সাল থেকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে এ পরীক্ষা নেয়া হয়। মোট ৪ ঘণ্টার পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় চারটি ভাগে। এর মধ্যে আছে রিডিং, লিসেনিং, রাইটিং ও স্পিকিং। রিডিংয়ে থাকে তিন থেকে পাঁচটি প্যাসেজ। শব্দ এবং বাক্য স্থাপন সহ বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। লিসেনিংয়ের ক্ষেত্রে তথ্য আলোচনার ভেতরের চিন্তাধারা ও কথা বলার ক্ষমতা পর্যবেক্ষণ করা হয়। ছয়টি প্যাসেজ আসে, যেখানে দুইজন ছাত্রের কথোপকথন সহ কিছু আলোচনা থাকবে সেখানে। মাত্র একবার শোনার সুযোগ পাবে। এক্ষেত্রে পরীক্ষার সময় ৩০ থেকে ৪০ মিনিট। রাইটিংয়ে ৫৫ মিনিটের পরীক্ষা হয়। যে কোনো বিষয়ের ওপর শুনে সেই বিষয়ে সারসংক্ষেপ লিখতে হবে। এছাড়া নিজস্ব মতামত দিয়ে রচনা লিখতে হবে। স্পিকিংয়ে ছয়টি কাজ সম্পন্ন করতে হবে। না থেমে কথা বলার ক্ষমতা যাচাই করা হয় এ পরীক্ষায়।