১০ নম্বর জার্সি এত গুরুত্বপূর্ণ কেন?

প্রথম দিকে ফুটবল খেলায় খেলোয়াড়দের পোশাকে (জার্সি) কোনো ক্রমিক নম্বর থাকত না। ১৯৫৪ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলে সর্বপ্রথম জার্সিতে নম্বরের প্রচলন হয়। সে সময় সব নম্বরের জার্সিই সমগুরুত্বপূর্ণ ছিল। কিন্তু কালক্রমে সেরা খেলোয়াড়েরা ১০ নম্বর জার্সি গায়ে খেলতে শুরু করলে এই জার্সিটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। এখন সাধারণভাবে ১০ নম্বর জার্সিটা তাঁকেই দেওয়া হয়, যিনি দলের সবচেয়ে চৌকস খেলোয়াড় এবং জয় নিশ্চিত করার জন্য অপরিহার্য বলে বিবেচিত। দক্ষিণ আফ্রিকায় চলতি বিশ্বকাপেও আর্জেন্টিনার মেসি, ব্রাজিলের কাকা, ইংল্যান্ডের রুনি, স্পেনের ফ্যাব্রিগাস ১০ নম্বর জার্সি পরে খেলছেন। ফলে এ ধারণা বদ্ধমূল হচ্ছে যে ১০ নম্বর জার্সিটা দলের সবচেয়ে ভালো খেলোয়াড়ের জন্য। কিন্তু জার্সির নম্বরের সঙ্গে ভালো খেলোয়াড়ের সম্পর্ক কী? আসলে ফুটবল খেলার মূল আকর্ষণ হলো গোল। আর গোল করার সুযোগ সবচেয়ে বেশি তাঁরই, যিনি সেন্টার ফরোয়ার্ডে খেলেন। পঞ্চাশের দশকে মাঠে ফুটবল খেলোয়াড়দের কৌশলগত অবস্থানের চিত্রটা ছিল এ রকম (২-৩-২-৩): গোলকিপারের পর দুজন ব্যাক, এরপর তিনজন হাফব্যাক, পরের সারিতে দুই পাশে রাইট উইং ও লেফট উইং এবং এরপর সেন্টার ফরোয়ার্ডে তিনজন। যদি গোলকিপারের জার্সি নম্বর হয় ১, তাহলে সেন্টার ফরোয়ার্ডের তিনজনের মধ্যে মাঝখানের খেলোয়াড়ের জার্সির নম্বর হয় ১০। সাধারণত গোল দিতে দক্ষ খেলোয়াড়কেই কেন্দ্রীয় অবস্থানে রাখা হতো, সেকালের বিন্যাসে স্বাভাবিক ক্রমিক অনুযায়ী তাঁর জার্সি নম্বর ১০। তিনি ফুটবল নিয়ে জাদুকরের মতো কৌশলে প্রতিপক্ষের দুর্গ ভেদ করে গোল দেন। আর অন্যরা তাঁকে পাস দিয়ে গোল করতে সাহায্য করেন। অবশ্য পঞ্চাশের দশকের ২-৩-২-৩ বিন্যাস এখন আর নেই, কিন্তু সেরা খেলোয়াড়ের ১০ নম্বর জার্সিটা রয়ে গেছে। পেলে ও ম্যারাডোনা ১০ নম্বর জার্সি পরে খেলেছেন। এ রকম নামকরা অন্য খেলোয়াড়েরা হলেন মাইকেল প্ল্যাটিনি, জিনেদিন জিদান, ডেভিড বেকহাম, জোহান ক্রুইফ, রবার্তো ব্যাজ্জিও, রোনালদিনহো, ফ্রানসিসকো টট্টি, লুই ফিগো, রাউল গনজালেস, জিকো, মাইকেল ওয়েন, জিওর্জি হ্যাজ্জি (রোমানিয়া), রিভালদো, মারিও কেমপেস (আর্জেন্টিনা), জে-জে ওকোচা (নাইজেরিয়া), ফিরেন্স পুসকাস (১৯৫৪) প্রমুখ।সুত্র-প্রথম আলো
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url