১২ হাজার বছর আগের খাবার!

ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে ১২ হাজার বছর আগের কিছু খাবার পাওয়া গেছে। প্রস্তরযুগের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার ভোজে এসব খাবার সরবরাহ করা হয় বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। হিলাজন টেচটিট এলাকায় একটি গুহার ভেতর মাটি খুঁড়ে এসব খাবার উদ্ধার করেন প্রত্নতত্ত্ববিদেরা।
ওই গুহার ভেতর প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধান চালিয়ে বিশেষজ্ঞরা সে যুগের বেশ কিছু সরঞ্জাম ও প্রাণীর হাড়গোড় আবিষ্কার করেন। প্রথমে তাঁরা ভেবেছিলেন, এটি প্রস্তরযুগের শেষের দিকের একটি অবকাশযাপনকেন্দ্র। পরে তাঁরা বুঝতে পারেন, এটি আসলে একটি কবরস্থান। সেখানে পাওয়া যায় নাতুফিয়ান যুগের মানুষের ২৮টি দেহাবশেষ। এর মধ্যে শিশু থেকে ৪৫ বছরের প্রাপ্তবয়স্ক লোক রয়েছে। সেখানে কচ্ছপ, গরুর মতো অতিকায় প্রাণী, ইগল ও শূকরসহ বিভিন্ন প্রাণীর হাড় পাওয়া যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাট বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটালি মুনরো ও জেরুজালেমের হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয়ের লিউরে গ্রসম্যান এই প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধানে নেতৃত্ব দেন। ওই গুহার কেন্দ্রস্থলে দুটি নিচু খোড়লের ব্যাপারে তাঁরা বিশেষভাবে আগ্রহী ছিলেন। এসব স্থান এত ছোট যে বসবাসের মতো নয়। একটির মধ্যে গরুর মতো প্রাণীর হাড়গোড়, অন্যটিতে কচ্ছপের খোলস ও হাড় পাওয়া যায়। কচ্ছপের খোলসগুলো প্রায় অক্ষত রয়েছে।
প্রত্নতত্ত্ববিদেরা জানান, রান্না করার পর খোলস থেকে কচ্ছপের মাংস ছাড়িয়ে নেওয়া হয়। এতে বোঝা যায়, উৎসর্গ করতেই কচ্ছপগুলোকে মারা হয়নি। খাওয়ার জন্য মারা হয়।
খোড়ল দুটির মধ্যে যে তিনটি মানব দেহাবশেষ পাওয়া যায়, এর মধ্যে একজন মাঝবয়সী নারী। অন্য দুটিও নারীর বলে ধারণা করা হচ্ছে। একটি দেহাবশেষের সঙ্গে ভ্রুণ পাওয়া গেছে। স্বাভাবিক কারণে মাঝবয়সী নারীর মৃত্যু হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই দেহাবশেষের সঙ্গে বিভিন্ন পশুপাখির বিভিন্ন অংশ সমাহিত করা হয়। এর মধ্যে চিতাবাঘের নিতম্বের হাড়, ইগলের পাখার ডগা ও নেউলের মাথার খুলি ছিল। রোম ও পালকের বৈশিষ্ট্য দেখে এসব প্রাণী শনাক্ত করা হয়। ওই নারীর শারীরিক বৈশিষ্ট্যে জন্মগত ত্রুটি ছিল। বিবিসি।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url