দেশের বাইরে পড়তে যাওয়ার আগে যা জানা দরকার

আর্টিকেলটি লিখেছেন-দেবশ্রী ভৌমিক ও হিমেল হাসান, সূত্র- http://goo.gl/8TpDpz

হরহামেশাই তো আর বিদেশে পড়তে যাওয়া যায় না, একটু প্রস্তুতিও দরকার আগে থেকে। বিদেশে পড়তে যেতে হলেই কতকগুলো বিষয় প্রথমেই চলে আসে। এগুলোর মধ্যে থাকে ILTS, GRE, জিম্যাট ও টোফেল। এগুলো ঠিক বাড়তি যোগ্যতা নয়, অপরিহার্য বলা যায়। তবে বিভিন্ন দেশের জন্য বিভিন্নটা লাগে। এই যেমন ধরুন, যে দেশে যেতে আইইএলটিএস লাগে সে দেশে টোফেল লাগে না। বলে নেয়া দরকার, টোফেল ও আইইএলটিএস দুটিই ইংরেজি ভাষার দক্ষতার পরীক্ষা।



টোফেল

প্রাতিষ্ঠানিক ইংরেজি বোঝার ক্ষমতা এ পরীক্ষার মাধ্যমে নেয়া হয়। টোফেল পরীক্ষায় ফল দুই বছরের জন্য কার্যকর হয়। ২০০৫ সাল থেকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে এ পরীক্ষা নেয়া হয়। মোট ৪ ঘণ্টার পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় চারটি ভাগে। এর মধ্যে আছে- রিডিং, লিসেনিং, রাইটিং ও স্পিকিং। রিডিংয়ে থাকে তিন থেকে পাঁচটি প্যাসেজ। শব্দ এবং বাক্যস্থাপনসহ বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। মাঝে-মধ্যে সারসংক্ষেপও লিখতে হয়।

লিসেনিংয়ের ক্ষেত্রে তথ্য আলোচনার ভেতরের চিন্তাধারা ও কথা বলার ক্ষমতা পর্যবেক্ষণ করা হয়। ছয়টি প্যাসেজ আসে যেখানে দুজন ছাত্রের কথোপকথনসহ কিছু আলোচনা থাকবে সেখানে। মাত্র একবার শোনার সুযোগ পাবে। এক্ষেত্রে পরীক্ষার সময় ৩০ থেকে ৪০ মিনিট।

রাইটিংয়ে ৫৫ মিনিটের পরীক্ষা হয়। যে কোনো বিষয়ের ওপর শুনে সেই বিষয়ে সারসংক্ষেপ লিখতে হবে। এছাড়া নিজস্ব মতামত দিয়ে রচনা লিখতে হবে। স্পিকিংয়ে ছয়টি কাজ সম্পন্ন করতে হবে। না থেমে কথা বলার ক্ষমতা যাচাই করা হয় এ পরীক্ষায়।

ILTS

আইইএলটিএস কিংবা টোফেল- যাই বলুন না কেন, এসব পরীক্ষা দেয়ার জন্য কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রয়োজন নেই। আইইএলটিএস হলো পরীক্ষার্থীর ইংরেজি ভাষাজ্ঞান যাচাইয়ের পরীক্ষা। আইইএলটিএসের ক্ষেত্রে একাডেমিক ও জেনারেল ট্রেনিং দুইভাবে অনুষ্ঠিত হয়। স্নাতক, স্নাতকোত্তর অথবা পিএইচডি পর্যায়ে পড়াশোনার জন্য একাডেমিক মডিউলে পরীক্ষা দিতে হয়। ইমিগ্রেশনের জন্য সাধারণত জেনারেল ট্রেনিং মডিউলে পরীক্ষা দিতে হয়। আইইএলটিএস পরীক্ষায়ও দুই ধরনের মডিউলেই চারটি অংশ থাকে- রিডিং, লিসেনিং, রাইটিং ও স্পিকিং।

আইইএলটিএসেও লিসেনিংয়ে কথোপকথন শুনে বোঝার ক্ষমতা যাচাই করা হয়। ৪০টি প্রশ্ন থাকবে সাধারণত। কোনো বিষয়ে বক্তৃতা, কথোপকথন ইত্যাদি বাজিয়ে শোনানো হয় পরীক্ষার্থীদের। শোনা অংশ থেকেই প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। একটি বিষয় শুধু একবারই বাজিয়ে শোনানো হয়।

রিডিং বিভাগেও ৪০টি প্রশ্ন থাকবে। সময় ১ ঘণ্টা। নানা জার্নাল, বই, সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন থেকে কিছু অংশ তুলে দেয়া হবে। সেখান থেকেই বাক্য পূরণ, সংক্ষিপ্ত উত্তর, সঠিক উত্তর খুঁজে বের করা ইত্যাদি থাকবে।

রাইটিংয়ে পরীক্ষার্থীর ইংরেজি লেখার দক্ষতা যাচাই করা হয়। প্রথম প্রশ্নটিতে সাধারণত কোনো চার্ট, ডায়াগ্রাম থাকে। এ থেকে নিজের কথায় বিশ্লেষণধর্মী উত্তর লিখতে হয়। দ্বিতীয় প্রশ্নটিতে সাধারণত কোনো বিষয়ের পক্ষে-বিপক্ষে মত বা যুক্তি উপস্থাপন করতে হয়। ১ ঘণ্টা থাকে সময়। স্পিকিংয়ে তিনটি অংশে ১১ থেকে ১৪ মিনিটের পরীক্ষা হয়। প্রথম অংশে পরীক্ষার্থীকে কিছু সাধারণ প্রশ্ন করা হয়, যেমন- পরিবার, পড়াশোনা, কাজ, বন্ধু ইত্যাদি। দ্বিতীয় অংশে একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে ২ মিনিট কথা বলতে হয়। তৃতীয় অংশে ৪ থেকে ৫ মিনিটের কথোপকথন হয় পরীক্ষকের সঙ্গে।

প্রস্তুতির শুরুতেই আপনার লক্ষ্য ঠিক করে নিন। এজন্য প্রথমেই মক টেস্ট দিয়ে নিলে ভালো হয়। এতে করে বুঝতে পারবেন, আপনি লক্ষ্য থেকে কত দূরে আছেন। তারপর সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নিন। প্রতিদিন নিয়ম করে পড়াশোনা করুন। কত দিন ধরে প্রস্তুতি নেবেন, এটা আপনার দক্ষতার ওপর নির্ভর করে। এছাড়া স্পিকিংয়ের জন্য বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে ইংরেজিতে কথা বলার অভ্যাস করুন। এটাও বেশ কিছু দিন ধরে চর্চা করা উচিত। ক্যামব্রিজ থেকে প্রকাশিত আইইএলটিএস পরীক্ষার পুরনো প্রশ্নপত্রের বই কিনতে পাওয়া যায়। এগুলো সমাধান করুন।

আইইএলটিএস সম্পর্কে যে কোনো তথ্য পেতে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হলো ব্রিটিশ কাউন্সিল এবং আইডিপি বাংলাদেশ। ব্রিটিশ কাউন্সিলের লাইব্রেরিতে প্রস্তুতির জন্য প্রচুর ভালো বই পাবেন। তবে এগুলো ব্যবহারের জন্য লাইব্রেরির সদস্য হতে হবে। বাংলাদেশে ব্রিটিশ কাউন্সিল ও আইডিপির আয়োজনে আইইএলটিএস পরীক্ষা দেয়া যায়। প্রতি মাসেই নির্দিষ্ট তারিখে দুই বা তিনবার পরীক্ষা দেয়া যায়। ওয়েবসাইটে অথবা ফোন করে পরীক্ষার তারিখ জেনে নিতে পারেন। ব্রিটিশ কাউন্সিলের আয়োজনে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটে পরীক্ষা দেয়া যায়। যোগাযোগ : ব্রিটিশ কাউন্সিল

ঢাকা-০২৮৬১৮৯০৫, চট্টগ্রাম-০৩১৬৫৭৮৮৪-৬, সিলেট-৮২১৮১৪৯২৫। ওয়েবসাইট :www.ielts.org, www.britishcouncil.org/bangladesh Ges.. আইডিপি বাংলাদেশ www.bangladesh.idp.com


জিম্যাট জিআরই

আর তাই উন্নত প্রযুক্তির স্বাদ নিতে অধিকাংশ শিক্ষার্থীরই প্রথম পছন্দ যুক্তরাষ্ট্র। তার সঙ্গে রয়েছে স্কলারশিপ ও পার্টটাইম চাকরির সুযোগ, যা আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশের শিক্ষার্থীদের সুবিধার পাশাপাশি আগ্রহও বাড়িয়ে দিচ্ছে। কিন্তু দরকার যে বিষয়ের সেই বিষয়টি হলো- জিম্যাট এবং জিআরই করা। বিদেশে হোক স্নাতক পড়া অথবা পিএইচডি করা জিআরই অথবা জিম্যাট করতে হবে। পার্থক্য শুধু যারা ব্যবসায় শিক্ষাকে মেজর নিতে চান তাদের জন্য শুধু জিম্যাট। বাকিদের জন্য জিআরই। জিম্যাট অথবা জিআরইয়ের জন্য নির্ধারিত কোনো মান পেতে না হলেও নিবন্ধন করতে হয়। যত বেশি নম্বর অর্জন করা যাবে, স্কলারশিপের পরিমাণ তত বেশি থাকবে।

টোফেল, জিআরই এবং জিম্যাট পরীক্ষার ফর্ম এবং পরীক্ষা সম্পর্কে প্রাসঙ্গিক তথ্য পেতে হলে আমেরিকান সেন্টারে যোগাযোগ করতে হবে। দুইভাবে নিবন্ধন করা যায়- অনলাইন এবং ব্যাংক ড্রাফটের মাধ্যমে। অনলাইনে পরীক্ষার সাত দিন আগে নিবন্ধন করা বাধ্যতামূলক। পরীক্ষা দেয়ার জন্য অবশ্যই পাসপোর্ট রাখতে হবে। যোগাযোগ : আমেরিকা সেন্টার, ফোন : ০২৮৮৫৫৫০০।
E-mail : DhakaPA@state.gov
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url