দুঃখ পেলে ইচ্ছে মতো কাঁদুন

 দুঃখ পেলে ইচ্ছে মতো কাঁদুন

মানুষ কাঁদে কারণে আবার কখনওবা অকারণে। কান্না-হাসি মিলিয়েই আমাদের এ জীবন। জীবনে বেঁচে থাকতে হলে হাসি-কান্নার মধ্যেই বাঁচতে হবে। আবেগে, অভিমানে, বেদনায় মানুষ কাঁদে। মানুষ যেভাবেই কাঁদুক না কেন, এ কান্না কিন্তু শরীরের জন্য বেশ উপকারী।


আমাদের মস্তিষ্কের একই অংশ থেকে হাসি অথবা কান্নার অনুভূতির উৎপত্তি হয়। একটা মানুষ কতটুকু কাঁদবে তা নির্ধারণ করে আমাদের জিন। আবার পুরুষ ও মহিলাদের কাঁদার ক্ষমতার তারতম্য রয়েছে। সাধারণত ছেলেদের চেয়ে মেয়েরাই বেশি কেঁদে থাকে। এক গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে, হাসি শরীরের জন্য যতটা উপকারী কান্নাও ঠিক ততটাই। হাসি ঠিক যেভাবে রক্তচাপ কমায়, শরীরকে ঝরঝরে ও তরতাজা রাখে কান্নাও ঠিক তাই করে।

নিউরোসাইকোলজিস্টরা সম্প্রতি গবেষণার মাধ্যমে জানিয়েছেন, কান্না মানসিক চাপ কমায় ও মনকে চাঙ্গা করে ভালোভাবে বেঁচে থাকতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা যায় যে, ৮৫ ভাগ মহিলা ও ৭৩ ভাগ পুরুষ কান্নার পর ভালো বোধ করছেন, তাদের মানসিক চাপ কমে যাচ্ছে।

জীবনে মাঝে মাঝেই এমন কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে যেগুলোর জন্য মানুষ প্রস্তুত থাকে না। ঠিক তখনই আমাদের মনে কান্নার অনুভূতি সৃষ্টি হয়। এ অনুভূতিগুলো মনের ওপরই তীব্র প্রভাব ফেলার পাশাপাশি শারীরিকভাবে তাৎক্ষণিক কিছু পরিবর্তন ঘটায়। এর মধ্যে অন্যতম হার্টের রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া, শরীরে লবণের মাত্রা কমে গিয়ে অসুস্থ হয়ে গিয়ে কর্মক্ষমতা কমে যাওয়া। মনের ওপর চাপ সৃষ্টির কারণে অনেকে কাঁদেন আবার অনেকেই বিমূঢ হয়ে নির্বাক হয়ে যান। পরবর্তী সময় দেখা গেছে, মনের ওপর চাপ সৃষ্টির কারণে যারা কেঁদেছেন তারা শারীরিক ও মানসিকভাবে অনেক সুস্থ আছেন। আবার মনের ওপর চাপ সৃষ্টির কারণে সে সময় না কেঁদে নির্বাক ছিলেন তাদের মধ্যে একটা অংশ পরবর্তী সময় বিষণ্নতাসহ শারীরিক নানা রোগে ভুগছে। তাই দুঃখ পেলে কাঁদুন, যতক্ষণ ইচ্ছে হয় কাঁদুন। মনে রাখবেন কান্না দুঃখকে জয় করার ও মনকে শক্তিশালী করার ক্ষমতা রাখে।


লিখেছেন-
গ্রন্থনা : ডা. মহসীন কবির
জনস্বাস্থ্যবিষয়ক লেখক ও গবেষক
প্রভাষক, ইনস্টিটিউট অব জেরিয়েট্রিক মেডিসিন
mohsinkabir13@gmail.com
সূত্র-
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url